src='https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js'/> ইকমার্স ব্যাবসায় ব্যার্থতার কারন কি?

ইকমার্স ব্যাবসায় ব্যার্থতার কারন কি?

সাম্প্রতি বাংলাদেশে যতগুলো ইকমার্স প্রতিষ্ঠান বাজারে ব্যাবসায় এসেছে, কেউই এখন তেমন সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। যারা ইকমার্স ব্যাবসায় করছেন বা করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন,তাদের জন্য আজকের আর্টিকেল গুরুত্বপূর্ণ। ইকমার্স ব্যাবসায় ব্যার্থতার কারনগুলো জানা থাকলে,আপনি সফল হতে পারবেন।

ইকমার্স ব্যাবসায় ব্যার্থতার কারন কি
ইকমার্স ব্যাবসায় ব্যার্থতার কারন কি

যেসকল প্রতিষ্ঠান অগ্রিম পেমেন্ট নিয়ে প্রতারণা করেছে,তাদের হিসেব ভিন্ন। প্রতারণা ব্যাবসায় পতন অনিবার্য। অন্যদিকে ক্যাশ অন ডেলিভারি সুবিধে দিয়েও এদেশে ইকমার্স ব্যাবসায় তেমন সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি করতে পারছেনা। কারন, আমাদের বাংলাদেশ ইকমার্স ব্যাবসায়ের উপযুক্ত পরিবেশ নেই। এটার জন্য আসলে আমরা কেউই দায়ী নই। যেদেশে একশো টাকার হ্যাডফোন কেনার জন্য পঞ্চাশ টাকার বাসভাড়া সাথে দুই ঘন্টা জ্যামে বসে থাকতে দ্বিধাবোধ করিনা, সেদেশে ইকমার্স ব্যাবসায় করে সফল হওয়ার চিন্তা করাটা,অনেকটা অন্ধের দেশে আয়না বিক্রির মতো!

ইকমার্স ব্যাবসায় ব্যার্থতার পেছনে আমরা অনেকে,অনেককিছুকে দায়ী করি। কেউ বলে, ডেলিভারি দিতে সময় বেশি, কেউ বলে ডেলিভারি চার্জ বেশি, আবার কেউ দায়ী করে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। আপনি যখন কোন পন্য নিয়ে ব্যাবসায় শুরু করবেন, তখন কিছুদিনের মধ্যে সেই একই পন্য নিয়ে আরো কয়েকজন বাজারে চলে আসবে। তখন শুরু হবে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। তারপর সেই একই পন্য যখন পাড়ার দোকানে সহজলভ্য হয়ে যাবে,তখন আর আপনার ব্যাবসায় থাকবেনা। কারন আপনাকে যত টাকা ডেলিভারি চার্জ দিবে, অফলাইনে বিক্রিতে দোকানদার তার অর্ধেক মুনাফাও করবেনা। সুতরাং এখানে অনলাইনে ব্যাবসা করা আপনার পক্ষে মুশকিল হয়ে পড়বে।

আমাদের বাংলাদেশে আমরা সময়ের মূল্য দিতে জানিনা। উন্নত দেশের মানুষ সময়কে অনেক মূল্যবান মনে করে। তাই তারা দশ হাজার টাকার মোবাইল কিনতে, দুইঘন্টা মার্কেটে সময় ব্যায় করার বিনিময়ে দুইশত টাকা ডেলিভারি চার্জ দিতে কোনপ্রকার কার্পন্যতা করেনা। তাছাড়া উন্নত দেশে অফলাইন কেনাকাটায় দোকানদার অসুস্থ প্রতিযোগিতা করেনা। আমাদের বাংলাদেশে অফলাইন বেচাবিক্রিতে প্রচুর অসুস্থ প্রতিযোগিতা হয়। যার কারনে একশো টাকার লেক্সাস বিক্সিট এখন প্রায় বেশিরভাগ দোকানে ষাট থেকে পঁয়ষট্টি টাকায় বিক্রি করে।  একসময় এই একই বিক্সিট নব্বই একশো টাকায় বিক্রি করতো। সাতশো টাকায় সয়াবিন তেলে দশ টাকা মুনাফা করতেও অফলাইনে কস্ট হয়। সেখানে আপনি অনলাইনে বিক্রি করলে ডেলিভারি চার্জই তো অন্তত বিশ থেকে ত্রিশ টাকা লাগবে,তাইনা!? এগুলার জন্য আপনি কাকে দায়ী করবেন? নিজেদের দায়ী করার ছাড়া উপায় নেই। এটাই বাস্তবতা।

আপনি অনলাইন ইকমার্সে নতুন কোন পন্য নিয়ে কাজ করতে পারেন। তবে ততক্ষনই আপনি ঠিকভাবে ব্যাবসা করতে পারবেন, যতক্ষন পর্যন্ত না সেটি অফলাইনে সহজলভ্য না হয়। দিনকেদিন অনলাইন মার্কেট তুমুল প্রতিযোগিতাপূর্ন হচ্ছে। মানুষ এখন অনলাইনে কিছু কেনার আগে,অফলাইনে সেটার মূল্য যাচাই করে তারপর কিনে। আর মানুষ অনলাইনে সেটাই কিনে,যেটার অফলাইন দাম,অনলাইনের তুলনায় বেশি। কোনপ্রকার ছাড় না পেলে,অনলাইনে কেনাকাটা করতে চায়না। ইভ্যালি,দারাজ,আলিবাবার মতো প্রতিষ্ঠানে যা বিক্রি হয়,বেশিরভাগই ডিসকাউন্ট পন্য। ডিসকাউন্টে কেনা ক্রেতারা কখনোই আপনার স্থায়িত্ব ক্রেতা নয়। তারা শুধুমাত্র ডিসকাউন্ট পেলেই আপনার থেকে কেনাকাটা করবে।

যারা স্টার্টআপ পর্যায়ে ইকমার্স ব্যাবসায় নিয়ে বাজারে আসে,তাদের নানা প্রতিবন্ধকতার কারনে তারা অধিক ডিসকাউন্টে পন্য বিক্রি করে অন্যদের সাথে পাল্লা দিয়ে পারেনা। ফলে তারা অল্পতে হতাশ হয়ে পড়ে। এটিই তাদের ব্যার্থতার অন্যতম কারন হতে পারে। তাই তাদের উচিৎ নতুন কোন পন্য নিয়ে কাজ করা। যেই পন্যে বাজারে প্রতিযোগিতা নেই। যেখানে কোনপ্রকার ডিসকাউন্ট ছাড়াই অনেক বিক্রি হবে।

যদি আমাদের দেশের মানুষ মনে করতো, কোন পন্য এক ঘন্টা ব্যায় করে কেনার চেয়ে, দুইশো টাকা ডেলিভারি চার্জ দেয়াটা উত্তম,তখন এদেশে ইকমার্স ব্যাবসায় দাড় করানো যেতো। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে, বাংলাদেশের তুলনায় ইকমার্স ব্যাবসায় ভালো জনপ্রিয়। আমাদের বাংলাদেশে পরিবেশগত কারনে ইকমার্স ব্যাবসায় দাঁড়াতে পারছেনা। যদিনা মানসিকতা পরিবর্তন না হয়,তবে এই ব্যাবসায় কখনোই দাঁড়াতে পারবেনা। বাসার নিচে দোকানে সয়াবিন তেলের যে দাম, একই দামে সয়াবিন তেল ত্রিশ টাকা রিক্সা ভাড়া দিয়ে বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসি। কোন কোন ক্ষেত্রে বাসার নিচের দোকানে তেলের দাম বাজার থেকেও দশ টাকায় কম পেতে পারি। সেখানে আমরা জিজ্ঞাসাও করিনা। করলেও যদি বাজার থেকে দশ টাকা বেশি দাবী করে,তখন সেখান থেকে না কিনে বাজার থেকেই নিয়ে আসি। এটা আমাদের মানসিকতা। সুতরাং এই মানসিকতা যতদিন থাকবে, ততদিন এদেশে কোন ইকমার্স ব্যাবসায় দাঁড়াতে পারবেনা।

আশাকরি আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনার যে তথ্য জানার প্রয়োজন ছিল সেটি জানতে পেরেছেন। কোন জানার বা মন্তব্য থাকলে মন্তব্য করতে পারেন। স্মার্টফোন বিষয়ক নিত্যনৈমিত্তিক অনেকে অজানা তথ্য আমাদের এই সাইটে আপনি পাবেন। নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের Facebook Page লাইক দিয়ে এক্টিভ থাকুন। সাইটের নিচের অংশে আমাদের ফেইসবুক পেইজ দেয়া আছে। সেখানে স্মার্টফোন সম্পর্কিত নিয়মিত নিত্যনতুন আরো অজানা তথ্য জানতে পারবেন।

Previous Post Next Post