মোবাইল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বা স্মার্টফোন কারখানা দিতে কত টাকা পুঁজি লাগে সেটা নিয়ে অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চায়। আপনার মনে যদি স্মার্টফোন ব্যাবসায় নিয়ে কোনপ্রকার কৌতুহল কাজ করে তাহলে আপনার জন্যই আমাদের আজকের আর্টকেল।
বিশ্বের অনেক বড়বড় ধনকুবের আছেন যারা চাইলেও মোবাইল ফোন উৎপাদন প্রতিষ্ঠান দিতে পারবেনা। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে,তাহলে ওয়ালটন ও সিম্ফনি কিভাবে বিজনেস করে! আসলে ওয়ালটন ও সিম্ফনি চায়না থেকে স্মার্টফোন অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিজেদের সিল লাগিয়ে বাংলাদেশে বিক্রি করতো। তারপর একটাসময় এসে এরা বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন করে। যদিও বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন করেছে কিন্তু ফোনের ৬০-৭০ শতাংশ কাজ বাহিরেই সেরে আসে। এদেশে শুধুমাত্র যন্ত্রাংশ জোড়াতালি দিয়ে বক্সে প্যাকিং করা হয়।
![]() |
স্মার্টফোনের কারখানা বানাতে কত টাকা লাগে |
আপনি যদি একটি স্মার্টফোন বা মোবাইল উৎপাদনকারী কারখানা গড়ে তুলতে চান তাহলে আপনাকে অন্তত দুই বা ততোধিক যন্ত্রাংশ নিজেদের উৎপাদন সক্ষমতা থাকতে হবে। ধরুন আপনি মোবাইলের ডিসপ্লে বানাতে পারেন, বডি বানাতে পারেন, ব্যাটারিও বানাতে পারেন। তখন প্রসেসর আর মাদারবোর্ড কারো থেকে কিনে এনে জোড়া লাগিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। একটি মোবাইলফোন তৈরি করা মানে আপনাকে অনেকগুলা যন্ত্রাংশের সংমিশ্রণে একটি স্মার্টফোন বা মোবাইল ফোন বানাতে হবে।
এক্ষেত্রে বাটন ফোন বা ফিচার ফোন উৎপাদন করা তুলনামূলক সহজ। বাটন ফোন বানাতে মাদারবোর্ড আমাদের দেশীয় কারখানায় বানানো যায়। অধিকতর প্রয়োজনে বিদেশ থেকে সহজে আমদানি করে সবগুলা যন্ত্রাদি একত্রিত করে একটি বাটন ফোন বানিয়ে ফেলা যায়।
কিন্তু আপনি যদি স্মার্টফোন বানাতে যান,তখন আপনাকে ডিসপ্লে জোগাড় করতে হবে,প্রসেসর যোগাড় করতে হবে,ব্যাটারি ও চার্জারের ব্যাবস্থা করতে হবে, তারপর সেটাকে পরীক্ষার জন্য অনুমোদন করাতে হবে। ফোনের যন্ত্রাংশ বানালে যেটা পরীক্ষা করাতে হবে। আপনি চাইলেই যেমন পাউরুটি বা কেক বানিয়ে বানিয়ে বাজারজাতকরণ করতে পারবেন না। বিএসটিআই থেকে অনুমোদন নিতে হবে। ঠিক তেমনি যেকোনো নতুন স্মার্টফোন বানানোর পরে সেটি লিস্টিং সাইট থেকে পরীক্ষা করে অনুমোদন নিতে হয়। এছাড়া যারা প্রসেসর বানায়,যারা ডিসপ্লে বানায়,যারা ক্যামেরা সেন্সর বানায় তাদের আলাদাভাবে অনুমোদন থাকতে হয়। আপনার প্রসেসর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে আপনি নিত্যনতুন প্রসেসর বানাচ্ছেন। প্রতিটা প্রসেসর নতুন উদ্ভাবন করার পরে লিস্টি সাইট বা প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমোদন নিতে হবে। মিডিয়াটেক একটি প্রসেসর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান,কোয়ালকম একটি প্রসেসর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান,এক্সিনোস প্রসেসর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যা ব্যাপকভাবে সামসাং তাদের স্মার্টফোনে ব্যাবহার করে আসছিল।
এখন আপনি যদি কোন স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে চান তাহলে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। তার উপর স্মার্টফোন বাজারে কিরকম প্রতিযোগিতা চলছে সেটা তো নিশ্চই জানেন। সবকিছু বিবেচনায় একটি মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোন প্রতিষ্ঠান দেয়া সহজ কাজ নয়।
আশাকরি আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনার যে তথ্য জানার প্রয়োজন ছিল সেটি জানতে পেরেছেন। কোন জানার বা মন্তব্য থাকলে মন্তব্য করতে পারেন। স্মার্টফোন বিষয়ক নিত্যনৈমিত্তিক অনেকে অজানা তথ্য আমাদের এই সাইটে আপনি পাবেন। নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের Facebook Page লাইক দিয়ে এক্টিভ থাকুন। সাইটের নিচের অংশে আমাদের ফেইসবুক পেইজ দেয়া আছে। সেখানে স্মার্টফোন সম্পর্কিত নিয়মিত নিত্যনতুন আরো অজানা তথ্য জানতে পারবেন।