বাংলাদেশের বাজারে মিড বাজেট দখলে নেয়ার চেস্টায় আছে সদ্য আসা আইটেল মোবাইল ব্রান্ড। আইটেল ভিশন নামে আইটেলের সিরিজ আছে। বাজারে থাকা মোবাইল বা স্মার্টফোব ব্রান্ড টেকনো,ইনফিনিক্স,আইটেল একই ব্রান্ড কিন্তু নাম আলাদা। আইটেল ভিশন দেশের বাজারে এই তিনটি ব্রান্ড মিড বাজেট ফোনের মার্কেট নিজেদের দখলে নেয়ার চেস্টায় ব্যাস্ত। আপনি বাসা থেকে চিন্তা করলে বের হলেন,রেডমি বা শাওমির ফোন কিনবেন কিন্তু মার্কেটে যাবার পর দোকানদার আপনাকে বুঝিয়ে কোনরকমে আইটেল কোম্পানির ফোন ধরিয়ে দিলো। এমন এখন অনেকের সাথেই এখন ঘটে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি আইটেল ব্রেন্ডের ফোন কিনতে অনেকটা বাধ্যই বলা যায়। এখানে ধারনা করা হচ্ছে,অপ্পো যেভাবে আগে তাদের সকল শোরুমে নিজেদের কর্মী নিয়োগ দিয়ে ফোন বিক্রি করতো, আইটেল একইভাবে তাদের বিভিন্ন শোরুমে সেলসম্যানদের অধিক কমিশনের বিনিময়ে বিক্রি বাড়াচ্ছে।
আইটেল মোবাইল যেকারনে কেনা উচিৎ |
চলুন আজ আইটেল ফোন নিয়ে আপনাদের যত প্রশ্ন ছিল সেগুলার উত্তর দিই।
★ আইটেল মোবাইল কেমন বাজেটের ফোন?
উত্তরঃ আইটেল মূলত দশ থেকে পনের হাজার বাজেট চয়েজের ফোন বলা যায়। স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী আইটেল ফোনের দাম তুলনামূলক কম। আইটেল ভিশন সিরিজের ফোনের ডিজাইন অনেক আকর্ষণীয়।
★ আইটেল কোন দেশের মোবাইল ব্রান্ড?
উত্তরঃ আইটেল অনেক আগে থেকেই আমাদের বাংলাদেশে ছিল। শুরুতে তারা বাটন ফোন এনেছিল। বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও ভারতেও আইটেল বিজনেস রয়েছে। আমাদের বাংলাদেশে আইটেল তাদের কারখানা স্থাপন করেছে,এখানে তাদের নিজস্ব কারখানা আছে।
★ আইটেল ফোনে গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টি কেমন?
উত্তরঃ আইটেল ফোন কেনার ১০০ দিনের মধ্যে হার্ডওয়্যার সমস্যা হলে হুবহু বা তারচেয়ে সামান্য ভালো বা সেরকম ফোন আপনাকে দিবে। (সফটওয়্যার সমস্যার ক্ষেত্রে এটি কার্যকর নয়) তারমানে এইনা যে,আপনাকে বক্স থেকে খুলে ইনটেক ফোন দিয়ে দিবে। আর ফোন কেনার ১বছর পর্যন্ত আপনি ওয়ারেন্টি সুবিধা পাবেন। ব্যাটারি ও চার্জারের ক্ষেত্রে মাসের গ্যারান্টি থাকবে। বাজারে কেবলমাত্র ইনফিনিক্স টেকনো ও আইটেল এই তিনটি ব্রান্ডেই আপনি এই সুবিধা পাবেন।
★ আইটেল ফোনের ক্যামেরা কেমন?
উত্তরঃ আইটেল ক্যামেরায় আলো বেশি দেখা যায় কিন্তু পর্যন্ত আলোতে ছবি না তুললে ডিটেলস ঘাটতি লক্ষ করা যায়। মানে,দেখে মনে হয় সুন্দর ছবি কিন্তু বাস্তবে ততটা সন্তুসজনক না। ফোনের ক্যামেরা অনেকটাই প্রসেসরের উপর নির্ভর করে। ভালো প্রসেসর দিলে,ভালো ছবি প্রসেসিং হবে। আইটেলের ক্যামেরা ভালো ফটোগ্রাফি করার জন্য ততটা সন্তশজনক নয়।
★ আইটেল প্রসেসর পারফরমেন্স কেমন?
উত্তরঃ এখন পর্যন্ত আইটেল স্নাপড্রাগন প্রসেসর দিয়ে কোন ফোন বাজারে আনতে পারেনি। যেগুলা এনেছে সবই মিডিয়াটেক প্রসেসর। গেমিং করার জন্য ভালো মানের প্রসেসর আইটেল এখন পর্যন্ত দিতে পারেনি।
★ গেমিং করার জন্য আইটেল ফোন কেমন হবে?
উত্তরঃ আপনি যদি গেমিং করার জন্য ফোন কেনার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে আইটেল ফোন এড়িয়ে যেতে পারেন। বেটার অপশন হাতে আছে। আইটেলের ফোন হ্যাভি গেমারদের জন্য নয়। টুকটাক হালকাপাতলা গেমিং করলে ঠিক ছিল।
★ আইটেল ফোনে চার্জ কেমন থাকে,মানে ব্যাটারি পারফরমেন্স কেমন?
উত্তরঃ আইটেল বেশিরভাগ ফোনে মোটামুটি ভালো ব্যাটারি দেয়া হয়েছে। ব্যাটারি বেকাপ ভালো পাবেন নিঃসন্দেহে। এই বাজেটে এখন প্রায় সব কোম্পানি নূন্মতম চার হাজার এমএইচের ব্যাটারি দেয়।
★ আইটেল ফোনে চার্জ দিতে কত সময় লাগে?
উত্তরঃ আইটেল ফোনে চার্জারের কোয়ালিটি মোটেও সন্তুশজনক নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা নিন্মমানের চার্জার দিয়ে,বেশি এমএইচের ব্যাটারি দিয়ে থাকে। ফলে চার্জ হতে অনেক বেশি সময় লাগে। আইটেল মোবাইল কোম্পানির অবশ্যই এই দিকটি নজর দেয়া উচিৎ। তাছাড়া চাজিং ক্যাবল নিয়েও অনেক অভিযোগ থাকে।
★ আইটেল ফোনে নিয়মিত আপডেট দেয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ, আইটেল ব্রান্ড ফোন লাঞ্চ করার নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আপডেট দেয়।
★ আইটেল ফোনে র্যাম ও রম কেমন?
উত্তরঃ আইটেল ব্রান্ডের মূল আকর্ষন তারা কম বাজেটে বেশি র্যাম ও রম দিয়ে থাকে। তারা তাদের কাছাকাছি বাজেটের বা কম্পিটিটিভ ফোনের চেয়ে বেশি র্যাম ও রম দিয়ে থাকে। এটা তাদের ভালো দিক। বেশি স্পেসিফিকেশন ফোন চাইলে আইটেল ফোন কিনতে পারেন।
★ আইটেল ফোনের পারফরমেন্স কেমন?
উত্তরঃ আইটেল যেহেতু এখন পর্যন্ত কোয়ালকম স্নাপড্রাগনের আপগ্রেড প্রসেসর দিয়ে ফোন বাজারে আনতে পারেনি সেহেতু তাদের ফোনের পারফরমেন্স হাইপ অনুযায়ী সন্তুশজনক নয়।
★ কারা আইটেল ফোন কেনা উচিৎ?
উত্তরঃ যারা বড় ডিসপ্লে যুক্ত ফোন পছন্দ করেন। যারা কম বাজেটে অধিক র্যাম ও রম যুক্ত ফোন চান,তারা আইটেল কোম্পানির ফোন কিনতে পারেন। এছাড়া আইটেল ফোনে কম বাজেটে অনেক ফিচার পাওয়া যায়,যা অনেক উচ্চ বাজেট ফোনেও আপনি পাবেন না।
★ কাদের আইটেল ব্রান্ডের ফোন কেনা উচিৎ না?
উত্তরঃ যারা দিনের বেশিরভাগ সময় ফোন পকেটে রাখেন। যারা ফাস্ট চার্জার যুক্ত ফোন চান,যারা হ্যাভি গেমিং করেন তাদের আইটেল ফোন কেনা উচিৎ নয়। আইটেল ফোনের চার্জিং প্রচুর সময় নেয়। ডিসপ্লে তুলনামূলক বড় সাইজ। যা দীর্ঘক্ষন চ্যাট করা বা পকেটে রাখায় সমস্যা ফেইস করতে হতে পারে।
আশাকরি আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনার যে তথ্য জানার প্রয়োজন ছিল সেটি জানতে পেরেছেন। কোন জানার বা মন্তব্য থাকলে মন্তব্য করতে পারেন। স্মার্টফোন বিষয়ক নিত্যনৈমিত্তিক অনেকে অজানা তথ্য আমাদের এই সাইটে আপনি পাবেন। নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের Facebook Page লাইক দিয়ে এক্টিভ থাকুন। সাইটের নিচের অংশে আমাদের ফেইসবুক পেইজ দেয়া আছে। সেখানে স্মার্টফোন সম্পর্কিত নিয়মিত নিত্যনতুন আরো অজানা তথ্য জানতে পারবেন।